Lokgeeti (লোকগীতি)

লোকগীতি কর্মসূচি – মহা শিবরাত্রির চতুর্থ দিন বীরভানপুর বয়েজ ক্লাবের বিশেষ আয়োজন

প্রতি বছর মার্চ মাসে মহা শিবরাত্রি উপলক্ষে বীরভানপুর বয়েজ ক্লাব আয়োজন করে এক বিশাল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যার অন্যতম আকর্ষণীয় অংশ হলো “লোকগীতি”। এই দিনটিতে বাঙালির হৃদয়ে গভীর প্রোথিত লোকসংস্কৃতির এক বিশেষ রূপ দেখতে পাওয়া যায়। ক্লাবের আয়োজনে লোকগীতি পারফর্ম্যান্সের মাধ্যমে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীতশিল্প জীবন্ত হয়ে ওঠে। বিশেষত, ২০২৪ সালের অনুষ্ঠানে বীরভানপুরের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত লোকগীতি শিল্পী “অর্পিতা চক্রবর্তী”। বাঁকুড়ার এই জনপ্রিয় শিল্পী তার সুরের জাদুতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে দিয়েছেন।

অর্পিতা চক্রবর্তীর মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা:

২০২৪ সালের মহা শিবরাত্রি উপলক্ষে বীরভানপুর বয়েজ ক্লাবের মঞ্চে লোকগীতির অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার প্রখ্যাত শিল্পী অর্পিতা চক্রবর্তী। তার সুললিত কণ্ঠে পরিবেশিত লোকগীতি স্থানীয় মানুষদের মধ্যে আনন্দের সঞ্চার ঘটায় এবং তাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে নতুন করে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়ক হয়। বাংলার লোক সঙ্গীতের সহজ, সুরেলা ও হৃদয়স্পর্শী কথা এবং সুর দর্শকশ্রোতাদের মোহিত করে তোলে। অর্পিতা চক্রবর্তীর পরিবেশনা শুধুমাত্র সঙ্গীতের একটি মুহূর্ত ছিল না, বরং এটি ছিল এক ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণ, যা স্থানীয় মানুষের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছিল।

লোকগীতির গুরুত্ব ও উৎসবের তাৎপর্য:

লোকগীতি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক অমূল্য ধারা। এই সঙ্গীতরীতি গ্রামবাংলার মানুষের জীবনযাপন, দুঃখ-সুখ, প্রার্থনা ও সামাজিক মূল্যবোধকে সুরের মাধ্যমে তুলে ধরে। মহা শিবরাত্রির পবিত্র উপলক্ষে এই লোকগীতি পরিবেশনা গ্রামের মানুষের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। লোকগীতি এমন একটি মাধ্যম, যা মানুষকে তার শিকড়ের সাথে সংযুক্ত করে, এবং এটি বাংলা সংস্কৃতির এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ধরনের সঙ্গীতের মাধ্যমে সমাজের সাধারণ মানুষের অনুভূতি এবং জীবনের সরলতা ফুটে ওঠে।

২০২৪ সালের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:

২০২৪ সালের মহা শিবরাত্রির চতুর্থ দিনে অর্পিতা চক্রবর্তীর পরিবেশনা নিঃসন্দেহে একটি স্মরণীয় অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার গাওয়া গানগুলি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তবে, বীরভানপুর বয়েজ ক্লাবের সদস্যরা এখানেই থেমে নেই। তারা আগামী বছর, ২০২৫ সালে, আরও বড় এবং নতুন কিছু আয়োজন করার পরিকল্পনা করছেন। ক্লাবের লক্ষ্য হলো লোকগীতি অনুষ্ঠানকে আরও বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরা এবং আরও বিখ্যাত শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানো, যাতে গ্রামের মানুষরা তাদের প্রিয় সঙ্গীতকে আরও বেশি উপভোগ করতে পারেন।

বড় মঞ্চ ও সুপার পারফর্ম্যান্সের আয়োজন:

২০২৫ সালে বীরভানপুর বয়েজ ক্লাবের পরিকল্পনা হলো একটি বিশাল মঞ্চ তৈরি করা, যেখানে আরও বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে। ক্লাবের সদস্যরা আরও বিখ্যাত শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানাতে চান, যারা বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে লোকগীতি পরিবেশন করবেন। সুপার স্টেজ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের মধ্যে আরও উদ্দীপনা ও আনন্দ সঞ্চার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্লাবের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো বাংলার লোকসংস্কৃতিকে জীবন্ত রাখা এবং নতুন প্রজন্মকে লোকগীতির প্রতি আকৃষ্ট করা।

স্থানীয় সংস্কৃতির উজ্জ্বল উদযাপন:

বীরভানপুর বয়েজ ক্লাবের এই লোকগীতি আয়োজন স্থানীয় সংস্কৃতির এক অনন্য উদযাপন। গ্রামের মানুষদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মিলনস্থল, যেখানে তারা একত্রিত হয়ে তাদের প্রিয় সঙ্গীত উপভোগ করতে পারে। লোকগীতি কেবলমাত্র সঙ্গীতের একটি মাধ্যম নয়, এটি মানুষের মনন, চিন্তা এবং সমাজের প্রতিচ্ছবি। এই আয়োজনের মাধ্যমে স্থানীয় সংস্কৃতির মূল্যায়ন ও সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে, যা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সহযোগিতার আহ্বান:

বীরভানপুর বয়েজ ক্লাবের এই মহৎ উদ্যোগে সকলকে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। আসুন, আমরা সকলে মিলে আমাদের ঐতিহ্যবাহী লোকগীতিকে নতুনভাবে উদযাপন করি এবং আগামী প্রজন্মের কাছে এই সঙ্গীতরীতির গুরুত্ব তুলে ধরি।

 

Our Gallery:

For More Photos Follow us on “Instagram & Facebook Page

Post navigation